রামগঞ্জের আন্দোলনকারী ৭ শিক্ষককে শোকজ ৩ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ

রামগঞ্জ

দিগন্তের আলো ডেস্ক :-

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিপরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় আন্দোলনকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তাদেরকে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে রামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) ফাতেমা ফেরদৌসীর সই করা আলাদা চিঠি ওই শিক্ষকদের দেওয়া হয়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়াসহ ৩ দফা দাবিতে লক্ষ্মীপুরসহ দেশব্যাপী আন্দোলন করছেন। ওই ৭ শিক্ষকও আন্দোলনে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

শোকজপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন, রামগঞ্জ উপজেলার নাগমুদ বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল বাশার, সহকারী শিক্ষক প্রিয়াংকা রাণী ভৌমিক, ফেরদৌসি বেগম, জয়পুরা এসআরএমএস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুকবুল হোসেন, সহকারী শিক্ষক নুরুন নাহার, মেহেদী হাসান ফরিদ ও মর্জিনা আক্তার।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, শিক্ষক আবুল বাশার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা ও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত প্রেস ব্রিফিং করেছেন। এটি সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিপরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ৩ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় শিক্ষক মুকবুল হোসেন, সহকারী শিক্ষক নুরুন নাহার, মেহেদী হাসান ফরিদ ও মর্জিনা আক্তারকে শোকজ করা হয়। এছাড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় শিক্ষক প্রিয়াংকা রাণী ভৌমিক ও ফেরদৌসি বেগমকে শোকজ করা হয়েছে। তারাও সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিপরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তারা ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা বর্জন করেছেন। এতে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা জীবনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

আবুল বাশারকে দেওয়া শোকজপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ (পরিমার্জিত সংস্করণ) অনুযায়ী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত আদেশ অমান্য করে আপনার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পরীক্ষা বর্জণের ঘোষণা দেন, যা সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিপরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আপনি ১ ডিসেম্বর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত প্রেস ব্রিফিং করেছেন যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি ২২ এর পরিপন্থী। আপনি ২ ডিসেম্বর ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা বর্জন করেছেন, এতে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা জীবনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে দুইজন শিক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, নোটিশ হাতে পেলে জবাব দেবেন।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা ফেরদৌসী বলেন, শোকজপ্রাপ্ত শিক্ষকরা দায়িত্ব কর্তব্য পালনে চরম অবহেলা করছেন। সরকারি আদেশ নির্দেশ অমান্যের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর কেন সুপারিশ করা হবে না, তার গ্রহণযোগ্য লিখিত জবাবের জন্য ৩ কর্মদিবসের মধ্যে আমার কাছে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন দেওয়াসহ ৩ দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিন লাখ সহকারী শিক্ষকের ‘লাগাতার’ কর্মবিরতি চলছে। গত ২৭ নভেম্বর থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন গত ১ ডিসেম্বর থেকে কর্মবিরতি এবং ৩ ডিসেম্বর থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবহিত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *