ধর্ষণের পর সালিসি বৈঠকে অপবাদ, অপমান সইতে না পেরে কিশোরীর ‘আত্মহত্যা’’

রামগতি

দিগন্তের আলো ডেস্ক :-

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে রাকিব হোসেন নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে কিশোরী প্রেমিকাকে (১৬) ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর সালিসি বৈঠকে অপবাদ দেওয়ায় মানসিক চাপে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে মামলা করলে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (৮ মার্চ) বিকেল পর্যন্তও অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১ মার্চ ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। পরদিন ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় সালিসি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো বিচার পায়নি ওই কিশোরী। উল্টো তাকে অপবাদ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকালে কিশোরীকে বাড়িতে রেখে তার মা বাড়ির পাশের জমিতে ফসল দেখতে যান। তখন সালিসি বৈঠকে থাকা হেলাল বাড়িতে ঢুকে কিশোরীসহ তার মায়ের চুল কেটে এলাকায় ঘুরানোর হুমকি দেন। এতে মানসিক চাপে দুপুরে সে আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় শুক্রবার (৭ মার্চ) ভিকটিমের মা বাদী হয়ে রামগতি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাকিবসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এতে হেলালকে গ্রেপ্তার করে লক্ষ্মীপুর আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। প্রধান অভিযুক্ত রাকিব পশ্চিম চরকলাকোপা গ্রামের খবির উদ্দিনের ছেলে।

অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- মো. আজাদ, জামশেদ উদ্দিন ও মো. বাশারসহ ১০ জন। তারা পশ্চিম চরকলাকোপা গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত রাকিবের সঙ্গে প্রায় ৭ মাস ধরে কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। গত ‍১ মার্চ রাতে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে রাকিব ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কিশোরীর মা টের পেয়ে ঘরে ঢুকলে রাকিব পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক ঘটনাটি ভুক্তভোগী পরিবার রাকিবের বাবা-মাকে জানায়। এতে তারা কাউকে কিছু জানাতে নিষেধ করেন। কিন্তু পরদিন ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। এতে মামলায় অভিযুক্তরা একটি সালিসি বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে ধর্ষণের ঘটনায় কোনো বিচার করা হয়নি। উল্টো কয়েকজন কিশোরীকে অপবাদ দেয়। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার মামলায় গ্রেপ্তার হেলাল বাড়িতে ঢুকে কিশোরীসহ তার মাকে চুল কেটে গ্রামে ঘুরানোর হুমকি দেয়। এটি সহ্য করতে না পেরে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে।

রামগতি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, ভিকটিমের মা থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *